সারাংশ
২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে দ্বিধাবিভক্ত সংকট ও সম্ভাবনার সন্ধিক্ষণে। বিশ্ববাজারে বাণিজ্য অস্থিরতা ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মুখেও ভারত ও এশিয়ার দেশগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আশা জাগাচ্ছে। এই প্রতিবেদন তুলে ধরেছে চলতি বছরের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ও বাংলাদেশসহ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের অবস্থা।
মূল পয়েন্টসমূহ
- ২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে ২.৮%-এ সীমিত থাকবে বলে পূর্বাভাস।
- ভারত থাকবে বিশ্বের দ্রুততম প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতির শীর্ষে—প্রায় ৬.৮% প্রবৃদ্ধি।
- বাংলাদেশের পোশাক ও রপ্তানি খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগে আশার সঞ্চার।
- খাদ্য ও জ্বালানির দামে ঊর্ধ্বগতি এবং ডলার সংকট বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
- উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে কৌশলগত সংস্কার ও অঞ্চলভিত্তিক বাণিজ্য জোরদার করা জরুরি।
২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও কিছু অঞ্চলের জন্য উজ্জ্বল দিক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে সঙ্কোচন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত—সবমিলিয়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF), বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হার থাকবে ২.৮% এর আশেপাশে, যা করোনার পূর্ববর্তী সময়ে তুলনামূলক কম।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ভারত, চীন ও অন্যান্য এশীয় দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বশেষ বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৬.৮% ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দ্রুত। অর্থনীতিবিদ ড. অরবিন্দ কুমার বলেন, “বিশ্বজুড়ে কঠিন সময় চললেও ভারতের বাজার দেশে-বিদেশে বিনিয়োগকারীদের জন্য আস্থার প্রতীক।” চীনের অর্থনীতিও পুনরুদ্ধার পর্যায়ে থাকলেও অন্তর্জাতিক ব্যবসায় ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও দৃঢ়তা রয়েছে। প্রথম আলো ও আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের রপ্তানি শীর্ষ উচ্চতায় পৌঁছেছে, পোশাক শিল্পসহ একাধিক খাতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত। যদিও মুদ্রাস্ফীতি ও ডলার সংকট অব্যাহত আছে, তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, কৌশলগত পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত আইনের মধ্যে থাকবে।
তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। দাম বেড়েছে খাদ্য, জ্বালানি ও উৎপাদন খরচে; পাশাপাশি পশ্চিমা সংকোচন ও বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অথচ, বৃহত্তর বাজার ও উৎপাদন কেন্দ্রের দিকে নীতিনির্ধারকরা নজর দিলে আশার আলো দেখা যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বছর অর্থনীতির সাফল্য নির্ভর করবে কৌশলগত জরুরি সিদ্ধান্ত ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারত, সাফল্যের গল্প লিখতে পারে।