সারাংশ
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাসটমস আয় ও শুল্ক সংগ্রহে গুরুতর ঘাটতির পাশাপাশি, মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতিকে নড়বড়ে করে তুলেছে। সংকট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে, সামনের বছরগুলোতে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
মূল পয়েন্টসমূহ
- ক্যাসটমস রাজস্ব ঘাটতি ও শুল্ক আয় হ্রাস দেশীয় বাজেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে
- মুল্যস্ফীতি ৮-৯% থাকায় খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে
- ২০২৫ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে
- বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কার্যকর সংস্কার জরুরি
- সয়াবিন, চাল, চিনি, ইত্যাদির দাম গত বছরের তুলনায় ৩-২৩% পর্যন্ত বেড়েছে
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন অস্থিরতার ছায়া এসে পড়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, বিগত ১৮ মাসে দেশের ক্যাসটমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনে আয় ঘাটতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতে দেশের রাজস্ব আহরণে বড় ধরণের ব্যাঘাত ঘটেছে, যা সরকারের চাহিদামাফিক বাজেট পরিচালনায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
খোদ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ক্যাসটমস রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বহুল কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অন্তত ১০-১২ শতাংশ পেছিয়ে আছে। গবেষণা অনুযায়ী, এ সময়ে মূল্যস্ফীতি ৮-৯ শতাংশে আটকে থাকায় সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার খরচ যথেষ্ট বেড়ে গেছে। অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “চলমান ডলার সংকট ও বৈদেশিক আয় প্রত্যাবাসনে ধীরগতির কারণে এই টানাপোড়েনের সূচনা হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সরকারের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নির্ভরশীলতা ও বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতা দেশের অর্থনীতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। গত ২০ বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে নিন্ম প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেখানে ভারতের মত প্রতিবেশী দেশে এই হার টন টন ব্যবধানে বেশি রয়েছে (ভারতে ২০,৬৬৬ মেট্রিক টন মোট আমদানির সর্বোচ্চ রেকর্ড)।
সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় হলো, সাধারণ ভোক্তাদের জন্য পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় আচরণ করছে না। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চালের দাম ৩ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম ২১.২ শতাংশ এবং চিনির দাম ২৩.৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে ২২৮ দিনের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা জোরালো অর্থনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়।
বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, “খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ক্যাসটমস ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার না আনলে সংকট কাটানো কঠিন।” এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ইতোমধ্যে সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি যুক্তিযুক্ত ফলপ্রসূ নীতিগত পদক্ষেপের দাবি করছে। এখন সময়ই বলবে—বাংলাদেশ কোন পথে এগোবে।