সারাংশ
গভীর গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো সংক্রামক রোগ, চিকিৎসার সীমিত সুযোগ এবং স্বাস্থ্যনীতির দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সংকট মোকাবিলায় কার্যকর নীতিমালা, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী চিকিৎসা প্রয়োজন—এটি বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার পরামর্শ।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বাংলাদেশে ৮২% জনগণ এখনো সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে
- ৮৪.৮% চিকিৎসা মামলায় রোগ নির্ণয়ে সমস্যা দেখা যায়
- করোনা-পরবর্তী সময়ে সংক্রামক রোগ পরীক্ষার হার ৩৫% কমেছে
- সামাজিক সচেতনতা ও নতুন পরীক্ষামূলক প্রযুক্তিরও ঘাটতি রয়েছে
- One Health কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে সমন্বিত পদক্ষেপের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
বাংলাদেশের ৮২ শতাংশ জনগণ এখনো কোনো না কোনো সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে, সাম্প্রতিক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। চিকিৎসা, জনস্বাস্থ্য এবং উন্নত পরীক্ষার সুযোগ সীমিত থাকায় দেশজুড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে।
স্বাস্থ্য নীতিবিদরা বলছেন, 'দেশের জনসংখ্যার অগ্রগতির গতি স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া কখনো সম্ভব নয়,'—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ডা. পারভেজ রেজা মন্তব্য করেন। গবেষণার তথ্য মতে, ৮৪.৮ শতাংশ চিকিৎসা সংক্রান্ত মামলায় রোগ নির্ণয়ে সমস্যা দেখা গেছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগ প্রতিরোধে চাহিদার তুলনায় চিকিৎসা সেবা অপর্যাপ্ত।
২০২৪ সালের মে মাসের সর্বশেষ নজরদারিতে, টিউবারকুলোসিস, কুষ্ঠ, হাম, হাঁচি এবং ইয়াওন রোগের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার এই বিষয়ে সতর্ক করছেন যে, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন ও প্রযুক্তিগ্রহণ ছাড়া জাতীয় জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন প্রযুক্তি, যেমন—GeneXpert—গ্রহণের মাধ্যমে মাত্র ২০ শতাংশ রোগ দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে,' জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু আধুনিক টেকসই চিকিৎসা উদ্ভাবন এবং প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের স্বল্পতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে COVID-19 মহামারির পর্তবর্তী সময়ে সংক্রামক রোগের পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া ~৩৫% কমে গেছে এবং বর্তমান ব্যবস্থাপনায় নীতিমালার দুর্বলতা প্রকট। একই সঙ্গে সামাজিক সচেতনতা, টিকাদান কার্যক্রম এবং গবেষণার সক্ষমতায়ও ঘাটতি রয়েছে। গবেষক শামীমা আফরিন বলেন, 'স্বাস্থ্য সংকটে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছে দরিদ্র ও রুরাল জনগোষ্ঠী—যেখানকার ৬০%-৭৩% মানুষ ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবাও পাচ্ছে না।'
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দ্রুত নীতি সংস্কার, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় গবেষণা অবকাঠামো উন্নয়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত One Health কার্যক্রমের আওতায় মানব, প্রাণী ও পরিবেশ স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
১৫টি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষণার তথ্য ব্যবহার করে পশ্চাদুর্দশ্যে প্রকাশিত হয়েছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় টেকসই ও বিজ্ঞাননির্ভর পদক্ষেপ ছাড়া ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে।