সারাংশ
গত ২১ মাসে বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। গবেষণা বলছে, মিডিয়া রিফর্ম কমিশন কার্যকর না হওয়া এবং সরকারের দমননীতির ফলে গণতন্ত্র হুমকির মুখে। পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে যুগোপযোগী পদক্ষেপের দাবি উঠেছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মহলে।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বিগত ২১ মাসে অন্তত ২০টি মিডিয়া সংস্থা সরকার-প্রশাসনের চাপে বন্ধ বা সীমিত
- সাংবাদিকদের হয়রানি, নিপীড়ন এবং গ্রেফতারের নজির বেড়েছে
- মিডিয়া রিফর্ম কমিশনের কার্যকর উদ্যোগের অভাব স্পষ্ট
- জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের দক্ষ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
- আইন সংস্কার ও স্বাধীন তদন্ত ছাড়া গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত অসম্ভব
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক নির্যাতন, সংবাদপত্র বন্ধ এবং মিডিয়া রিফর্মের অভাব গুরুতর সংকটের জন্ম দিয়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত অন্তত ২০টি সংবাদপত্র ও মিডিয়া সংস্থা সরকার বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চাপে বন্ধ বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে সংবাদ পরিবেশনা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, 'সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের এমন নজির অতীতে খুব কমই দেখা গেছে,' বলেন মিডিয়া বিশ্লেষক মওলানা আজহার আলী। এছাড়া, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহু সংবাদকর্মী ও মানবাধিকার সংস্থা। তাঁরা মনে করেন, কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া সাংবাদিকদের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, সাংবাদিক আলম আযমী, মাহফুজ আলম এবং আইয়ুবী লীকে হয়রানি ও নিপীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে, শুধু সত্য সংবাদ প্রকাশের কারণে।
এছাড়া, মিডিয়া রিফর্ম কমিশনের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটবে বলেও সতর্ক করেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। 'গণমাধ্যমে স্বাধীনতার অন্তরায় শুধু সরকার নয়, মালিকানাধীন মিডিয়া গোষ্ঠীর চাপ এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণেও সংকট বেড়েছে,' মন্তব্য করেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে আইন সংস্কার, স্বাধীন তদন্ত এবং মিডিয়া রিফর্ম কমিশনের কার্যকরী গঠন ছাড়া পরিস্থিতি পরিবর্তন অসম্ভব। আন্তর্জাতিক মহলও দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এমতাবস্থায়, সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।