সারাংশ
গত এক বছরে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও সমন্বিত সরকার ও বেসরকারি অংশগ্রহণে টেকসই উন্নয়নের দিকে বড় অগ্রগতি করেছে। প্রতিবেশ সংকট, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং বৈশ্বিক অর্থায়ন—সব মিলিয়ে দেশজুড়ে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
মূল পয়েন্টসমূহ
- সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ২৭টির বেশি পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে
- ঢাকাসহ প্রধান শহরে ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অবকাঠামো উন্নয়ন ও ৮ লেনের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে
- জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সামলাতে বৈশ্বিক অর্থায়ন ও স্মার্ট প্রযুক্তি সংযোজন বাড়ছে
- বিশ্বব্যাংক অনুসারে, বার্ষিক জিডিপির ২% পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে
- দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও বাসযোগ্য শহর গঠনে নীতিনির্ধারক ও নাগরিকদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে
বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব, শহরায়ন এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও টেকসই উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার দেখিয়েছে। গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে অন্তত ২৭টি নির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারের নগর উন্নয়ন কর্মসূচিতে সমন্বয় ও গতিশীলতা এসেছে, বিশেষ করে এলডিপি (লাইভেবল ডেমোক্রেটিক পার্টি)-এর মতো আধুনিক প্রকল্পের মাধ্যমে।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, "উন্নয়নের গতিতে টেকসই শহর গড়তে যথাযথ পরিকল্পনা ও বৈশ্বিক অর্থায়ন আবশ্যক; দুই দশক আগেও যেখানে ঢাকার মহল্লাভিত্তিক উন্নয়ন তেমন ছিল না, বর্তমানে সেখানে অন্তত ২০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ ও নতুন ৮ লেনের সড়কসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।"
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণের জন্য বাংলাদেশে বাৎসরিক জিডিপির ২% পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে, বিশেষত অতি বৃষ্টিপাত, ভূগর্ভস্থ পানি দূষণ, এবং বেড়ে যাওয়া গরমে কৃষি খাতে ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়েছে। অতিবৃষ্টির মূল প্রতিবন্ধক হিসাবে জলাবদ্ধতা, শক্তিশালী সড়ক, ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বল ব্যবস্থা চিহ্নিত করা হয়েছে। সমাধানে সিটি করপোরেশন উদ্যোগে পানিনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে।
এছাড়া, দেশের ৮টি প্রধান শহরে চিহ্নিত করা হয়েছে উচ্চ ঝুঁকির অঞ্চল; শহর-পরিকল্পনাবিদদের মতে, সড়ক প্রশস্তকরণ, সবুজায়ন, ও অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণে বেসরকারি বিনিয়োগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা ও আবর্জনা সমস্যার মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় রিমোট সেন্সিং ও স্মার্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার চালু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "একটি উন্নত, বাসযোগ্য ও নিরাপদ ঢাকা গড়তে সরকার বদ্ধপরিকর। সামগ্রিকভাবে টেকসই শহর গড়তে সকলের অংশগ্রহণ ও পরিকল্পিত কাজে দেশের ভবিষ্যৎ আরও উন্নত ও নিরাপদ হবে।"
পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে, বাংলাদেশ তার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সমাজব্যবস্থাকে আরও দক্ষ ও সহনশীল করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে।