সারাংশ
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো অস্থির ও প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম। অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা, অনিয়ন্ত্রিত স্থানীয় সরকার এবং বৈশ্বিক ঝুঁকির সামনে টিকে থাকতে সমন্বিত সংস্কার প্রক্রিয়া জরুরি বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে
- অর্থনৈতিক কাঠামো বৈশ্বিক শোক সামলাতে অক্ষম বলে OECD-এর বিশ্লেষণ
- স্থানীয় সরকার ও আর্থিক খাতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
- মূল সমস্যা সমাধানে সমন্বিত ও অবিলম্বে কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজন
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দুর্বল প্রশাসন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলছে
বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। নতুন একাধিক গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম, এবং বর্তমান কাঠামো বৈশ্বিক ধাক্কা সামলাতে যথেষ্ট নয়। OECD-র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং যেসব বহিঃশক্তির প্রভাবে হঠাৎ পরিবর্তন আসে, তার জন্য প্রস্তুতি অত্যন্ত দুর্বল (তথ্যসূত্র: দ্য ডেইলি স্টার, TBS News)। ২০১৫ সালে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.২ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এছাড়া, দেশি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মাঝেও বড় ফারাক ছিল; দেশে মোট ২৮ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু নেট রিজার্ভ মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলার। একই গবেষণায় জানা যায়, ২০২৪ সালে দেশজ উৎপাদন ৫.৯ শতাংশ হারে বাড়লেও, মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৪ শতাংশ। গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সময়ে জবাবদিহি ও স্থায়িত্ব অপরিহার্য; মূল সমস্যাগুলো সমাধান না করা হলে অর্থনীতির ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।’ অধ্যাপক আরিফ আহমেদ মন্তব্য করেছেন, “স্থানীয় সরকারে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা ছাড়া কাঠামোগত সংস্কার সম্ভব নয়।” বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বহুমুখী কাঠামোগত সংস্কার—বিশেষ করে আর্থিক খাত, প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকারে—জরুরি হয়ে পড়েছে। OECD-র মতে, চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশকে অন্তত নয় মাসের মধ্যে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর্থিক খাতের অস্বচ্ছতা, অকার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা, এবং দুর্বল প্রতিষ্ঠান দেশটির বৃহত্তর আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রেখেছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে প্রবৃদ্ধি আরও কমবে এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা ঝুঁকিতে পড়বে।