সারাংশ
গত এক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংকট দেখা দিয়েছে। সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম এবং বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে এখনই সমবেত ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ দরকার।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বাংলাদেশে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৯% ছাড়িয়েছে, যা বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ
- ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ও ঋণ খেলাপি বৃদ্ধি অর্থনীতির উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে
- অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সম্মিলিত ও কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞদের মত
- ডিজিটাল আর্থিক খাতের বিকাশ এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পরিস্থিতি উত্তরণে সহায়ক হতে পারে
- দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য উৎপাদনশীলতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। গত এক বছরে, দেশে উত্তরোত্তর মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের তুলনায় ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ঘরে পৌঁছেছে, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এ সময়ে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, ঋণ খেলাপি বৃদ্ধি এবং রিজার্ভ ঘাটতির মতো সংকট পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে। অর্থনীতিবিদ ড. রাশেদ আলী বলেন, "মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।"
নানা উৎস থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে স্থিতিশীলতা আনা। স্পষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ও স্বচ্ছ কৌশল ছাড়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয় বলে বিভিন্ন গবেষণা ফলাফলে উঠে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থা চালু ও স্মার্ট অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়াতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির দিকেও মনোনিবেশ করতে হবে। একই সঙ্গে, ব্যাংকিং খাতে সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কার্যকর না হলে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।
সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে—যেমন, ঋণ পুনঃতফসিল নীতিমালা সংস্কার, অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্প্রসারণ, এবং বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বরাদ্দ বৃদ্ধি। তবে নীতিনির্ধারক ও বিশ্লেষকরা জোর দিচ্ছেন আরও সংহত ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে।
সবশেষে, অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, ব্যাংক ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ করা এবং বৈদেশিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞগণ।