সারাংশ
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা ১২ ম্যাচে জয়বিহীন থাকার পাশাপাশি গোল করাতেও পিছিয়ে। দলীয় পারফরম্যান্স পুনর্গঠনে বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণের মান ও কৌশলগত পরিকল্পনার অভাবকে চিহ্নিত করেছেন, যখন সমর্থক ও ফেডারেশনেরও ঘুরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়ছে।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বাংলাদেশ ফুটবল দল টানা ১২ ম্যাচ ধরে জয়হীন অবস্থায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পড়েছে।
- দল মাত্র ১টি গোল করতে সক্ষম হয়েছে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে।
- দলের সংকটের মূল কারণ হিসাবে প্রশিক্ষণ ও কৌশলগত দুর্বলতা চিহ্নিত হয়েছে।
- আন্তর্জাতিক মানের কোচিং ও প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি বিশেষজ্ঞ ও সমর্থকদের জোর সুপারিশ।
- স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার দাবী প্রবল হচ্ছে; ফুটবলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে মাঠের বাজে অবস্থার উত্তরণে।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জন্য সময়টা দুঃস্বপ্নের – টানা ১২ ম্যাচ ধরে রয়েছে জয়ের খরা, যার মধ্যে দেশের মাঠেও উল্লেখযোগ্য কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়নি। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে মাত্র ১টি গোল করতে পেরেছে লাল-সবুজ, এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ১ পয়েন্ট অর্জন করাও দুষ্কর হয়ে উঠেছে।
ফুটবল বোদ্ধারা মনে করছেন, কৌশলগত সমস্যা, মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ও খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তার অভাব – এই সংকটের মূল কারণ। সাবেক ফুটবল তারকা ও বিশ্লেষক আলিম ভূঁইয়া বলেন, "একের পর এক হারের মধ্যে দল যখন পড়ে যায়, তখন আত্মবিশ্বাসে প্রচণ্ড আঘাত লাগে। সঠিক পরিকল্পনা ও পেশাদার ব্যবস্থাপনার অভাবে এই মানসিক দশা কাটিয়ে উঠতে পারছে না খেলোয়াড়রা।"
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের অবস্থান-তত্বের উপর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকনিক্যাল স্টাফ ও কোচিংয়ে বিদেশি পেশাদারদের জড়িত করার বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক একাধিক ম্যাচের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতিপক্ষের দ্রুতগতির আক্রমণ ও সংহত রক্ষণভাগের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তাল সামলাতে পারছেন না।
নিউক্যাসল ইউনাইটেডের কোচ এডি হাউ-এর মতো আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক দলের মধ্যে এনে উন্নত ট্যাকটিক্স ও ফিটনেস ট্রেনিং চালু করা জরুরি বলে মত দেন ফুটবল একাডেমির কো-অর্ডিনেটর নাওয়াজ শরীফ। তিনি বলেন, "লিটন দাসের মতো পারফরমার বেশি চাই এবং ছোটদের গ্রুম করার জন্য আধুনিক ফুটবল যন্ত্রপাতি ও কোচিং খুবই দরকার।"
সাম্প্রতিক খেলার ফলাফল ও নিম্নমানের পারফরম্যান্সের কারণে ফুটবল ফেডারেশন ও সমর্থকদের মাঝেও হতাশা স্পষ্ট। দেশের জনপ্রিয় ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমগুলোয় বিশ্লেষণ উঠে এসেছে, মাঠে-বাইরে উদ্দীপনা ফেরাতে যুবাদের বেশি সুযোগ দান, কমিউনিটি বেইজড ফুটবল বাড়ানো ও ক্লাব পর্যায়ে পেশাদারিত্ব আনয়নের দাবী।
খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে ও ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল লক্ষ্য করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ওপর জোর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন দেখার পালা, ফুটবল ফেডারেশন ও নির্বাচকরা মাঠে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেন কিনা।