সারাংশ
গবেষণায় দেখা গেছে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশেষ উপায়ে ধানসহ বিভিন্ন শস্য চাষে উৎপাদন ও মাটির স্বাস্থ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রযুক্তিতে ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার ব্যবহার করে চাষের স্থায়িত্ব, গুণগত মান ও পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে।
মূল পয়েন্টসমূহ
- ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার ব্যবহার করলে ধান ও অন্যান্য শস্যের উৎপাদন ১০-১৫% বৃদ্ধি পায়
- নতুন প্রযুক্তিতে মাটির স্বাস্থ্য ও জৈবিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত হচ্ছে
- কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো যাচ্ছে
- সহজেই মাঠ পর্যায়ে বড় পরিসরে বাস্তবায়নযোগ্য এবং খরচ সাশ্রয়ী
- পরিবেশবান্ধব কৃষি নিশ্চিত করতে এ পদ্ধতির গুরুত্ব বাড়ছে
বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চলেছে 'ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার' প্রযুক্তি। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বৈজ্ঞানিক নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎ শক্তি ও মাইক্রোবায়োলজিক্যাল উপাদান ব্যবহারে ধান চাষসহ ডাল, সবজি, আলু, গম ও অন্যান্য শস্য উৎপাদনের হার বেড়েছে ১০-১৫% পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, "নতুন পদ্ধতিতে মাটির জৈব গুণাগুণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে কম কীটনাশক এবং কম রাসায়নিক সারের ব্যবহারেও বেশি ফলন পাওয়া যাচ্ছে," বলেন ড. হাসান শহীদ, বিশ^বিদ্যালয়ে কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষক।
বিশ^ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার ব্যবহারে ধানের কাঁটা ৩-৪ দিনে ২-৩ কেজি বেশী উৎপাদিত হয়েছে। পাশাপাশি, চাষের জন্য ব্যবহৃত জৈব ম্যাটার ও মাটি শোষণ ক্ষমতা উন্নত হয়েছে।
গবেষণার অন্যতম পরীক্ষা ছিল ১,০০০ বর্গমিটারে চালানো 'শেবার গাছ' ভিত্তিক ধান আবাদ, যেখানে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ ফলন এবং নিখুঁত বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ মিলেছে। আরও লক্ষ্যণীয়, প্রযুক্তির সহায়তায় মাঠের রোগবালাই উল্লেখযোগ্য হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি, পানি ও বিদ্যুৎ খরচও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
চীনে VLASS ব্লেজার প্রযুক্তি, লাইভ সেল বায়োলজি আর সার্বিকভাবে রিয়েল-টাইম সেলের কার্যকলাপে এই ইলেকট্রো-এগ্রি ব্যবস্থার ইতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। গবেষকরা বলছেন, "নতুন এক্সপেরিমেন্টাল ফার্মে আমাদের ফলন ৯৩% অবধি সফলতা দিয়েছে, যা কৃষিজ খাতে একটি মাইলফলক," যোগ করেন ড. শহীদ।
কৃষি আধুনিকীকরণের এ যাত্রা শুধুমাত্র উৎপাদন বাড়াচ্ছে না; বরং টেকসই পরিবেশ ও অর্থনীতির দিক থেকেও এটি এক নতুন পথ দেখাচ্ছে। স্বল্প খরচে এবং পরিবেশবান্ধব কৌশলে বেশি ফসল উৎপাদনের এ পদ্ধতি চলতি দশকে দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।