সারাংশ
বিশ্ব অর্থনীতির ঋণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা আগামী বছরগুলোতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুরবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারত, সর্বাধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘসহ বৈশ্বিক সংস্থাগুলো খেলাপি ঝুঁকি ও টেকসই উন্নয়নে বাধার আশঙ্কা প্রকাশ করছে।
মূল পয়েন্টসমূহ
- বিশ্বব্যাপী ঋণ ৮৯ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে
- দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারত গুরুতর ঝুঁকিতে
- ৮৪% অর্থনীতিবিদ ২০২৪ সালে অর্থনৈতিক দুর্বলতার পূর্বাভাস দিয়েছেন
- জাতিসংঘ, IMF, WEF—সব প্রতিষ্ঠানই ব্যাপক ঝুঁকির কথা বলেছে
- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য কাঠামোগত সংস্কার ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য
বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে ২০২৪ সালে প্রকাশিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে করোনা মহামারি, যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন ও সরবরাহ জটিলতার কারণে বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের মতে, বর্তমানে ৮৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঋণে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো, যার মধ্যে ২৭ লাখ কোটি ডলার রয়েছে শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ওপর।
বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো ঋণের মতো গুরুতর সমস্যায় পড়েছে। বাংলাদেশের গবেষণা সংস্থা সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. খায়রুল হোসেন বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারত খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বহুজাতিক ঋণদাতারা খেলাপি ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন।” আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) ও বিশ্ব ব্যাংক সতর্ক করেছে, এই ঋণ সিন্ড্রোম বজায় থাকলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দা আসতে পারে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৪% অর্থনীতিবিদ মনে করেন ২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল থাকবে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋণ বৃদ্ধির ফলে সামাজিক খাতে ব্যয় কমতে পারে, যা দারিদ্র্য ও বৈষম্য বাড়াবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের রিজার্ভ ও সামগ্রিক অর্থনীতি চাপে রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পুতিনের মন্তব্য অনুযায়ী, ২০ বছরে উন্নয়নশীল দেশের ঋণ বেড়েছে ৪০%। অঙ্গসংগঠনগুলোর মতে, ‘অর্থনৈতিক নীতিমালার দ্রুত সংস্কার ও ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বৈশ্বিক ঋণ এবং অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে হলে স্বচ্ছতার পাশাপাশি কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।’ তারা সতর্ক করেন, “এভাবে চলতে থাকলে ২০২৯ সালের মধ্যেই অনেক দেশের অর্থনীতি সংকটের কিনারায় পৌঁছাতে পারে।”