সারাংশ
ভারত ও বাংলাদেশ বিশ্বের দুই দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে নিজেদের উপস্থিতি দৃঢ়ভাবে জানান দিচ্ছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উভয় দেশ প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি এবং বৈশ্বিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এই সাফল্যে মূল ভূমিকা রেখেছে উৎপাদনশীলতা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ।
মূল পয়েন্টসমূহ
- ভারত ও বাংলাদেশ এশিয়ার দুই দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি
- ২০২৪ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৫% এবং বাংলাদেশের ৬.২% সম্ভাব্য
- বাংলাদেশ ৩৩০.৩২ মিলিয়ন ডলারের ছয়টি নতুন জাহাজ রপ্তানি চুক্তি করেছে
- স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২৭১ গুণ বেড়েছে
- কৃষি ও মহামারী পরিস্থিতি থেকে নতুন ঝুঁকির মুখে ভারত
ভারত ও বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী, গত দশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির নজির স্থাপন করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিষয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ভারতের সর্বশেষ অর্থনৈতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটির সমন্বিত প্রবৃদ্ধি গতবছর ছিল ৬.২% এবং ২০২৪ সালে এটি ৬.৫% ছুঁয়ে যেতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে (ফিচ রেটিংস, ২০২৪)। দেশের অভ্যন্তরে চাঙা চাহিদা, উৎপাদনশীল খাতের উন্নতি এবং প্রযুক্তি খাতে নতুন বিনিয়োগ এর প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তবে, চলতি বছরে ভারতে বিলম্বিত বর্ষা ও চরম আবহাওয়াজনিত কারণে কৃষি উৎপাদন কমে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একটি আশাব্যঞ্জক ছবিই উঠে এসেছে। দেশের রপ্তানি খাতে বিশেষ সাফল্য অর্জিত হয়েছে, বিশেষত বৃহৎ বিটি-টু-বি ডিল ও আন্তর্জাতিক শিপিং অর্ডারের ক্ষেত্রে। চলতি জুন মাসেই ছয়টি জাহাজ রপ্তানি চুক্তি হয়েছে যার আর্থিক মূল্য ৩৩০.৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও স্বাধীনতার পর থেকে ২৭১ গুণ বেড়েছে, যা দেশের টেকসই উন্নয়ের সেরা দলিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষক ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, 'বাংলাদেশ এখন একটি কেস স্টাডি—কিভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষ নেতৃত্ব অর্থনৈতিক সাফল্যের আলো দেখাতে পারে।' (প্রথম আলো, ২০২৪)।
তবে এই অর্জনগুলোর পাশাপাশি দুর্বলতা ও ঝুঁকিও রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ: 'দক্ষিণ এশিয়ার বাজার অর্থনীতির পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য টিকিয়ে রাখতে হলে, কাঠামোগত সংস্কার ও টেকসই উন্নয়ন দেখা জরুরি'।
উভয় দেশের সরকার ইতিমধ্যে কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে উৎপাদন ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানী পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে আঁটসাঁট পথচলায়।