সারাংশ
২০২৩-২৪ সালে বাংলাদেশে মতামত ভিত্তিক গবেষণায় সমাজে বহুমাত্রিক সংলাপ ও চিন্তাশীল মতবিনিময়ের নতুন ধারার উন্মেষ ধরা পড়েছে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে নবীনদের অংশগ্রহণ এবং বিশ্লেষণাত্মক মনোভাব উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রচলিত ধারণা, গুরুত্ব পাচ্ছে তথ্যনির্ভর আলোচনা।
মূল পয়েন্টসমূহ
- মতামত প্রকাশ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা সমাজে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে
- তরুণ ও নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে
- তথ্যনির্ভর ও যুক্তিভিত্তিক আলোচনা সামনে আসছে
- গণতন্ত্র ও সামাজিক সংহতিতে মতবিনিময়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে
- বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে, দেশে মতামত বিনিময় ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা গত এক বছরে রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সমকালীন প্রসঙ্গগুলোতে মতবিনিময়, সমালোচনা ও প্রত্যুত্তর চালাচ্ছেন ছাত্র-যুবা থেকে শুরু করে পেশাজীবী—খোদ গবেষণা বলছে, এটি সমাজে গণতান্ত্রিক মানস গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
জুন, ২০২৪-এ প্রকাশিত গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, তরুণদের অন্তত ৫৭% এই মুহূর্তে নিয়মিতভাবে দেশীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন, যা গত বছরের তুলনায় ১৭% বেশি। গবেষক রাজনীতিবিদ ড. ফারহানা ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের তরুণ সমাজ এখন আর মৌন দর্শক নয়; তারা সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ও সমালোচক। নতুন আইটি পদ্ধতির কল্যাণে মত-প্রকাশে গতি এসেছে।”
গবেষণাটিতে উঠে এসেছে, জনমত সংক্রান্ত নানা মাধ্যম যেমন অনলাইন মতামত জরিপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সংবাদপত্রের পাঠকের চিঠি—প্রভৃতিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ ছাড়া, নারীরাও মতবিনিময়ে আগের চেয়ে বেশি যুক্ত হচ্ছেন: ২০২৪ সালে নারীদের অংশগ্রহণ ৩১% ছুঁয়েছে, যেখানে ২০২২ সালে তা ছিল মাত্র ১৮%।
বিশ্লেষক ড. আহসান হাবিব বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য যোগাযোগ-ভাবনার এমন বিস্তার খুবই ইতিবাচক,”—তবে তিনি সতর্ক করেন, এই ধারাকে টিকিয়ে রাখতে হলে তথ্যনির্ভর ও যুক্তিভিত্তিক চর্চাকে উৎসাহ দিতে হবে।
গবেষণা আরও জানায়, কুইক পোল ও ট্রাম্প ইইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত যুক্তি-প্রতিযুক্তি এবং বৈশ্বিক ইস্যুতে মত প্রকাশে বাংলাদেশিরা বেশ উন্মুক্ত মনোভাব দেখিয়েছেন। নতুনত্ব এসেছে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে তথ্য যাচাই ও যুক্তিগত নিরীক্ষার প্রবণতায়। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য আর উগ্রতার বিরুদ্ধে আরও সজাগ থাকতে হবে—না হলে, এই অগ্রগতি বিঘ্নিত হতে পারে।
পরিশেষে গবেষকরা বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক কাঠামো ও সামাজিক সংহতির জন্য মতবিনিময় সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হোক—এটাই সময়ের দাবি।